বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোটার : সাভারে পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ডাকাতচক্রের ৮ সদস্য গ্রেফতার ও লুন্ঠিত স্বর্ণ উদ্ধার করেছে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেপ্তারকৃত স্বর্ণ ডাকাত চক্রের সদস্যরা হলো, মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার হাটিপাড়া গ্রামের মৃত যতীশ চন্দ্র হালদারের ছেলে সুরেশ চন্দ্র হালদার (৪৮), ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত হরে কৃষ্ণ মজুমদারের ছেলে মিঠুন মজুমদার মিঠু (৩৩), একই জেলা ও থানার পোথাইল গ্রামের সুনীল চন্দ্র দাসের ছেলে উজ্জল চন্দ্র দাস (৩২), মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ঝাউটিয়া গ্রামের মৃত মন্টু দাসের ছেলে মিহির দাস (৩২), ঢাকার পল্লবী থানা এলাকার মৃত ফরিদ আহম্মেদের ছেলে মোঃ সোহেল আহম্মেদ পল্লব (৪৫), সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের মোঃ নাসিম উদ্দিনের ছেলে সাবেক সেনা সদস্য ফারুক হোসেন (৪০), মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি থানার আব্দুল্লাপুর গ্রামের শুবল চন্দ্র ঘোষের ছেলে শংকর চন্দ্র ঘোষ (৪৫) ও মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম ছিলারচর গ্রামের আলমগীর চৌকিদারের ছেলে মিঠুন চৌকিদার (৩০)।
তাদের রবিবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা প্রত্যেকে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।
এছাড়া পুলিশের পরিচয়ে সংঘটিত স্বর্ণ লুটের ডাকাতির ২২ ভরি স্বর্ণ, স্বর্ণ বিক্রির ৫ লক্ষ টাকা, লুন্ঠিত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
পিবিআই পুলিশ বলছে, ঢাকার তাতীবাজার এলাকার সোনালী গোল্ড হাউজ নামক স্বর্ণের দোকানের মালিক অর্জুন হালদার তার পুরাতন কারিগর সুরেশ হালদারকে সঙ্গে নিয়ে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ি জেলার পলাশ জুয়েলার্সের মালিক গৌরাঙ্গ ও রাজলক্ষী জুয়েলার্সের মালিক জয়দেবকে স্বর্ণ সরবরাহের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঐদিন একটি কালো রংয়ের ট্রাভেল ব্যাগে স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, বল চেইন, কানপাশাসহ সর্বমোট ১৬৬.৫৫৩ (একশত ছিষট্টি দশমিক পাঁচশত তিপান্ন) ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার যার সর্বমোট মুল্য অনুমান ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৯২ হাজার ১৫৭ টাকাসহ অর্জুন হালদার তার তাতী বাজারে অবস্থিত বাসা থেকে রাজবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়।
অর্জুন হালদারের বাসার সামনে আগে থেকেই অপেক্ষারত সুরেশ হালদারকে সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেটে তাতী বাজার মোড়ে আসেন। সেখান থেকে সাভার পরিবহণ বাসে রওনা দিয়ে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে নামেন। গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস পরিবর্তন করে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদার ও তার সাবেক কারিগর সুরেশ হালদার রাজবাড়ি পরিবহনে উঠেন। বাসটি সাভারের আমিনবাজার অতিক্রম করে বৈদ্যুতিক পাওয়ার প্ল্যান্টের সামনে ফাঁকা জায়গায় পৌছলে ৪টি মটর সাইকেলে ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা মাস্ক পরিহিত ডাকাত বাসটির গতিরোধ করে বাসটি থামিয়ে বাসে উঠে।
তারা তাদেরকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদার ও তার সঙ্গে থাকা সুরেশ হালদারকে টানা হেচড়া করে বাস থেকে নামিয়ে তাদের দুজনকে আলাদা আলাদা মটর সাইকেলে উঠিয়ে গাবতলীর দিকে রওনা হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর মটর সাইকেল থামিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদারকে নাকে মুখে কিল ঘুষি মেরে রক্তাক্ত জখম করে তার হাতে থাকা স্বর্ণসহ ব্যাগটি এবং নকিয়া মোবাইল ফোন মডেল নং-২১৬ নিয়ে দ্রুতবেগে গাবতলীর দিকে মটর সাইকেল চালিয়ে চলে যায়। ঘটনার পর অর্জুন হালদার বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর ১৭৬/২০ (সাভার)।
এসএস